ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষিকাকে হেনস্থা, লোডশেডিং করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা প্রধান শিক্ষকের, জানার পরই কড়া দাওয়াই দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষিকাকে কোনও কারণ ছাড়াই হেনস্থা ও তাঁর বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তেলেনিপাড়া মহাত্মা গান্ধী বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের দায়ে প্রধান শিক্ষককে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু আরও বড় অভিযোগ উঠল সেই অপসারিত হওয়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে, প্রমাণ লোপাটের জন্য রাতের অন্ধকারে স্কুলে ঢুকলেন ওই প্রধান শিক্ষক। এমনকি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
২০১৬ সালে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে উক্ত স্কুলের শিক্ষিকা সুনীতা শর্মার। অসুস্থতার কারণে ছুটি ও অর্থের প্রয়োজন পড়ে তাঁর। কিন্তু অভিযোগ, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষিকাকে ক্যানসারে আক্রান্তদের জন্য বিশেষ ছুটি দেন নি। এর পাশাপাশি শিক্ষিকার যে গ্রেড অএ বৃদ্ধি হয়েছে, তাও তাঁকে জানানো হয়নি। আর কোনও নোটিশ ছাড়াও শিক্ষিকার বেতন থেকে ৮ হাজার টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এরপরই হাইকোর্টে অভিযোগ জানান ওই শিক্ষিকা। সেই মামলার শুনানি ছিল গত ১১ই মে। শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে অপসারণের নির্দেশ দেন। আর এবার সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই ফের ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেই আরও এক বড় অভিযোগ উঠল।
অভিযোগ, গত ১৪ই মে রাতে চুপিসারে স্কুলে ঢোকেন ওই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। কেউ যাতে কোনও সন্দেহ না করে সেই কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অন্ধকার করে দেন তিনি। তিনি যে প্রমাণ লোপাট করতেই এভাবে স্কুলে ঢুকেছিলেন, তা বেশ স্পষ্ট।
এই ঘটনা জানার পরই চন্দননগরের পুলিশ কমিশনারকে এই ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁকে জেরা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বিচারপতির তরফে। আগামী ৭ই জুন সেই রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।