কেরল থেকে কালনা! ভালোবাসার টানে বাইকে ২৫০০ কিমি পাড়ি দিলেন স্বামী!
গোটা লকডাউন কেটেছে স্ত্রীর থেকে দূরে। এদিকে তার মাঝেই স্ত্রী খবর পাঠায় তিনি অন্তঃসত্ত্বা, জুলাই মাসেই হবে ডেলিভারি। এই খবর পাওয়ার পর আর কোনও দূরত্বই কষ্টসাধ্য মনে হয়নি কালনার কেশবপুর গ্রামের অর্ক মণ্ডলের।
কেরল থেকে কালনা, দূরত্ব প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার। টানা ৪ দিন মোটরবাইক চালিয়ে কেরলের মল্লপুরম থেকে কালনার গ্রামে ফিরলেন এই ঠিকা শ্রমিক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাড়ি ফেরা কেবলমাত্র ভালবাসার টানে, জানালেন অর্কর দাদা বিকাশ ঘোষ।
অবিভক্ত বর্ধমানের কালনার কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা অর্ক জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে পরিযায়ী। এতদিন ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন কেরলের মল্লপুরমে। করোনাভাইরাসের প্রকোপে কর্মক্ষেত্রেও সঙ্কট তৈরি হয়। লকডাউনের কারণে ২ মাসেরও বেশি সময় বাম রাজ্যেই আটকে থাকেন অর্ক। কিন্তু স্ত্রীর খবর পাওয়ার পরই কার্যত উতলা হয়ে ওঠেন অর্ক। বাড়ি ফেরার জন্য সবরকমের চেষ্টাই করেন। পুলিশের কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথাও জানান। তবে কোনও সাহায্যই তিনি পাননি। অর্কর কথায়, কেরল পুলিশ তাঁকে সাহায্য করতে চেয়েছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ থেকে কোনও ট্রেন না আসায় তাঁরা ফিরতে পারেনি। এমন অবস্থায় মালিকের দেওয়া মোটরবাইক নিয়েই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন অর্ক। সঙ্গী হন তাঁর দাদা।
২ তারিখ অর্ক ও বিকাশ মোটরবাইক নিয়ে কালনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। টানা ৪ দিন, আড়াই হাজার কিলোমিটার বাইক চালিয়ে শেষে কালনায় এসে পৌঁছন তাঁরা। পথে কেটেছে বিনিদ্র রাত। অনেক সময়ই শরীরের ক্লান্তি বাড়ি ফেরায় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে, তবে অর্ক থামেননি। কেরল থেকে ওড়িশা হয়ে কালনায় ফিরেছেন স্রেফ ভালবাসার টানে। এখন রয়েছেন কেশবপুর সুখরঞ্জন দেবনাথ এমএসকে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে।